পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশের ন্যায় কুষ্টিয়াতেও কর্মবিরতি পালন করছেন এমবিবিএস ও বিডিএস চিকিৎসকরা। সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি দিলেও চিকিৎকরা ৫০০ টাকা ও ৭০০ টাকা ফিস নিয়ে প্রাইভেট চেম্বার ও ক্লিনিকে ঠিকই রোগী দেখছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রোগীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বর্হিবিভাগের সকল ধরনের সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসা প্রত্যাশী অসুস্থ রোগীরা এসে সেবা না পেয়ে আক্ষেপ নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। টাকা পয়সাওয়ালা হাতেগোনা কয়েকজন প্রাইভেট চেম্বারের দিকে সেবা নিতে গেলেও অসুস্থতা আর হতাশা নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের। একই চিত্র দেখা গেছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও। স্বৈরাচারের লুটতরাজের পর খুড়িয়ে খুড়িয়ে শুধুমাত্র বর্হিবিভাগে সেবাদান কার্যক্রম চালু হলেও চিকিৎসকদের পাঁচ দফা কর্মসূচিতে তা এখন বন্ধ। ফলে সেখানেও চিকিৎসা প্রত্যাশী রোগীদের হতাশ হয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। এদিকে শহরের প্রাইভেট চেম্বার ও ক্লিনিকে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে চিকিৎসকরাও আছেন,সেবাও দিচ্ছেন।
দৌলতপুর থেকে আসা রহিমা নামে ষাটোর্ধ এক অসুস্থ মহিলা প্রতিবেদককে জানান,” সদর হাসপাতালে ডাক্তার দেকাতে এইছিলাম। ডাক্তার নাই বলে চলি যাচ্চি।
মেলা কষ্ট কইরি আইছিলাম। ক্লিনিকে ডাক্তার দেখানির টাকাও নেই।”
খোকসা থেকে হেদায়েত নামে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক কৃষক জানান,” মেডিকেলে ১০ টাকায় বড়ো ডাক্তার দেখানো যায় শুনি আইছিলাম। আইসি দেখি সব বন্ধ। এখন চইলি যাচ্চি। আমাগের তো আর মেলা ট্যাকা নাই যে প্রাইভিট চেম্বারে যাবো।” কালাম নামে এক রোগীর স্বজন প্রতিবেদককে বলেন,” শুধুমাত্র অসহায় আর গরীব মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালের ৫ টাকা, ১০ টাকার সেবা বন্ধ। প্রাইভেট চেম্বারে ৫০০ টাকা, ১০০০ টাকা নিয়ে ঠিকই রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা।”
এবিষয়ে চিকিৎক ও প্রাইভেট ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। কুষ্টিয়া ড্যাব’র আহ্বায়ক ডাঃমোঃ ফজলুল হক প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান,”আন্দোলনের ব্যাপারে আমাদের সাথে তেমন একটা আলাপ হয়নি। শুনেছি সকালে একটা মানবন্ধন হয়েছে। বাকিটা আমাদের সদস্য সচিব ডাঃ নাসিমুল বারী বাপ্পির সাথে কথা বলেন।”
এ ব্যাপারে জানতে কুষ্টিয়া ড্যাব’র সদস্য সচিব ডাঃ নাসিমুল বারী বাপ্পির মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক প্রতিবেদককে জানান, “৮শ থেকে ১ হাজার রোগী প্রতিদিন বহির্বিভাগে সেবা নিয়ে থাকেন। আজ সকাল থেকে ডাক্তাররা সকল প্রকার সেবা বিরতি পালন করছেন। এতে বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা কয়েকশ রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে ফিরে যান। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালেও বহির্বিভাগে পাঁচ শত থেকে সাত শত রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু সকাল থেকে সকল সেবা বন্ধ হয়ে যায়। কোন ডাক্তার সেবা দিচ্ছে না।”
আপনার মতামত লিখুন :