প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে সভাপতি পদে দুঃসময়ে দলের সঙ্গে না থাকা এবং ফ্যাসিস্টের সুবিধাভোগি ইসমাইল হোসেন মুরাদ সভাপতি হওয়ার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কুষ্টিয়া সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি।
কুষ্টিয়া সদর থানার হরিপুরের সন্তান মুরাদের চাচা হাজী কাশেম এক সময় সদর থানা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ২০১০ সালের দিকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
তার ভগ্নিপতি চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ এক সময় বিএনপিতে থাকলেও সেও আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তার ছোট ভাইকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে নিজ এলাকায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। রশিদ চালকল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পান হানিফের আশির্বাদে, আওয়ামী লীগের সময়ে তিনি ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। ব্যাংকের টাকা মেওে দেওয়ার জন্য তিনি পরিকল্পিত ঋণ খেলাপী সাজেন, মোটা অংকের সুদও মওকুপ করেন। এরপরও একাধিক মামলা হয়, বেশ কয়েকবার আর্থিক কেলেঙ্কারীর জন্য তাকে জেলেও যেতে হয়েছে। চাল দেওয়ার চুক্তি কওে টাকা নিয়ে পরিমান মতো চাল না দেওয়ায় সম্প্রতি এক মামলায় পুলিশ তাকে আটক করেছেন।
ইসমাইল হোসেন মুরাদের ছোট ভাইও যুবলীগ নেতা এবং আওয়ামী লীগের গত দুটো নির্বাচনে নিজ বাড়িতে নৌকার প্রচার প্রচারণার অফিস খোলেন। মুরাদ কুষ্টিয়া সদর থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, আওয়ামী দুঃশাসন জোরদার হলে তিনিও পালে গা ভাসিয়ে আত্মীয় স্বজনদেও মতোই সুবিধাবাদীদেও দলে ভিড়ে যান। তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে এক দিনের জন্যও অংশ নেননি, তার বিরুদ্ধে কোথাও একটি মামলাও নেই।
৫ আগস্টেও পর তিনি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারের আস্থা ও আনুগত্য লাভ করেন। সবাইকে অবাক কওে দিয়ে তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান। দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন ইউনিয়নে নিজের অনুগতদের দিয়ে সার্চ কমিটি গঠন ও ইউনিয়ন সম্মেলনের প্রস্তুতি নেন। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পান জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব। এ সম্মেলনে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব নিজেদের দলভারি করার জন্য সব ইউনিয়নে কাউন্সিলর ভাগভাগি করে নেন। নিজেদেও একান্ত অনুগত ও বাধ্যগত ছাড়া কাউকে কাউন্সিলর করেননি। এর মধ্যে সব থেকে মজার বিষয় হলো, আহ্বায়ক নিজের ইউনিয়নে একাই ৫০ জন কাউন্সিলর নিয়েছেন এবং সদস্য সচিবের নিজের ইউনিয়ন থেকেও তিনি ৫০জন কাউন্সিলর নিয়েছেন।
ইসমাইল হোসেন মুরাদ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের আস্থা ভাজন হিসেবে দাপটের সঙ্গে ইউনিয়ন কমিটিগুলো নিজের মতো করে নিয়েছেন। তার পছন্দের বাইরে কাউকে কমিটিতে স্থান দেননি। এ নিয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার তৃণমূল বিএনপিতে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বার বার চেষ্টা করেও সবগুলো ইউনিয়নে কমিটি গঠন করতে পারেননি। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের ইউনিয়নসহ মোট চারটি ইউনিয়নে কমিটি ঘোষণা না দিয়ে শুধু ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলর তালিকা করে সম্মেলন সম্পন্ন করছে।
দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের মিথ্যা মামলা হামলা, নির্যাতনের শিকার হওয়া কুষ্টিয়া সদরের তৃণমূলের ত্যাগী কর্মিদের সঙ্গে কথা হলে তারা জনান, ইসমাইল হোসেন মুরাদ নিজের সুবিধাবাদী আত্মীয় স্বজনের কারণে আওয়ামী লীগে সময়ে তার নামে একটি মামলাও হয়নি, তিনি এক দিনের জন্যও কোন মিছিল মিটিং এ আসেননি। ওয়ার্ড পর্যায়ে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের বাদ দিয়ে তিনি মাইম্যান তৈরি করেছেন, অনেক ক্ষেত্রে আওয়ামী দোসরদের কাউন্সিলর করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :