ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাংশায় ঘুমের মধ্যে সাপের কামড়, স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

আমাদের খবর ২৪

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৩, ১১:৫৫ এএম

পাংশায় ঘুমের মধ্যে সাপের কামড়, স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

রাজবাড়ীর পাংশায় সাপের কামড়ে সাফা পারভীন (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২১ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের জয়কেষ্টপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সাফা ওই গ্রামের মো. শাজাহান মণ্ডলের মেয়ে।

জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সাফা মশারি টানিয়ে তার বিছানায় শুয়ে ছিল। রাত ২টার দিকে ঘুমের ঘোরে নড়েচড়ে উঠলে তার শরীরে কিছু একটা কামড় দেয়। সেসময় সে দ্রুত উঠে দেখতে পায় মশারির নিচ থেকে একটি সাপ ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। তখন সে চিৎকার দিলে পরিবারের লোকজন গিয়ে সাপটিকে মেরে ফেলে ও তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সাফার চাচি সালমা বেগম জানান, সাফাকে প্রথমে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে সাপে কাটার ভ্যাকসিন না থাকায় দায়িত্বরত চিকিৎসক সাফাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানেও ভ্যাকসিন নেই বলে জানান চিকিৎসক। তবে চিকিৎসক একটি ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন এনে দিতে বললে ভ্যাকসিন এনে দেয়া হয়। পরে চিকিৎসক সাফার শরীরে সেটি পুশ করেন। এতে সাফার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল অথবা রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। পরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে খোকসা পর্যন্ত পৌঁছুলে সকাল ৭টার দিকে সাফা মারা যায়।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা: তাপস কুমার সরকার জানান, সাপে কামড়ানো কোনো রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে কি না তিনি জানেন না। ওই সময়ে কে দায়িত্বে ছিলেন তিনি তা-ও জানেন না। পরে যোগাযোগ করলে তিনি বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলে জানান।

এদিকে, মৃত সাপটি দেখতে এলাকাবাসী ভিড় করছেন সাফাদের বাড়িতে। অনেকেই বলছেন এটি শঙ্খিনী জাতের কালাচ বা কেউটে সাপ। যার বৈজ্ঞানিক নাম কমন ক্রেইট।

বাংলাদেশ ওয়াইল্ড লাইফ স্নেক রেসকিউর সদস্য সাইফ লিমন জানান, বাংলাদেশের সব সব জায়গায়ই কালাচ সাপ আছে, কিন্তু মানুষের চোখে পড়ে না। কারণ এরা নিশাচর। গভীর রাতে এরা বিচরণ করে। এরা খাড়াভাবে উপরে উঠতে পারে। তাই প্রায়ই বিছানায় উঠে এই সাপ মানুষকে দংশনের খবর পাওয়া যায়।

এরা উষ্ণতার খোঁজে মানুষের বিছানায় চলে যায়। ঘুমন্ত অবস্থায় পাশ ফেরার কারণে শরীরের নিচে চাপা পড়ে অথবা হাত-পা নড়াচড়া করলে নীরবে দংশন করে দ্রুত কেটে পড়ে এ সাপ।

এই সাপের সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হচ্ছে এরা শতভাগ বিষ প্রয়োগ করে। অন্যান্য বিষধর সাপ দংশন করলে তার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ থাকে ড্রাইবাইট। ড্রাইবাইট হচ্ছে দংশন করবে ঠিকই কিন্তু বিষ প্রয়োগ করবে না। তবে কালাচের দংশনে কোনো ড্রাইবাইট নেই। সে দংশন করা মানেই বিষ প্রয়োগ হবে। যেহেতু এই সাপ দংশন করলে মানুষ সেটা বুঝতেই পারে না এটা মৃত্যুর বড় কারণ।

Link copied!