প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ১০:১০ পিএম
গুরুত্বর আহত আলফাজ ডাক্তারের শয্যা পাশে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন
কুষ্টিয়ায় নব্য বিএনপি ও আওয়ামী দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সার্চ কমিটির অন্যতম সদস্য আলফাজ ডাক্তার। গত রোববার বাদ আসর এই হামলার শিকার হন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেলে শংকরদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির অফিসে অতর্কিত হামলা চালয় আওয়ামী দোসর খ্যাত শতাধিক দুর্বৃত্তরা। সেসময় দুর্বৃত্তরা ইউনিয়ন বিএনপির অফিস ভাংচুর ও গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলফাজ উদ্দিন সহ দুজনকে বেধড়ক মারপিট করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় গুরুতর আহত ৩ জনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতদের মধ্যে আলফাজ ডাক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, ঘটনার সময় আলফাজ উদ্দিন ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে বসে ছিল। এমন সময় শতাধিক ব্যক্তি মিছিল নিয়ে এসে অফিসে হামলা চালায়। এসময় গুরুত্বর আহত হন আলফাজ উদ্দিন। এছাড়াও অফিসে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। এই হামলার নেতৃত্ব দেন আওয়ামী দোসর ও ইউনিয়ন মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি বর্তমান বিএনপি নেতা মাহাবুব, জেলা তাঁতি লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের ভাই মাসুদ রানা, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লাল্টু ওরফে ছোট লাল্টু। এরা সকলেই এখন নব্য বিএনপির সদস্য। জেলা বিএনপির এক নেতার ছত্রছায়ায় চলেন তারা।
এদিকে হামলাকারী মাহাবুব হকের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু ছবি শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার সাথে। এছাড়াও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার বেশ কিছু ছবি ভাইরাল হয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে যে অভিযোগগুলো আসছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আলফাজ উদ্দিন বিগত স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে দলের দুর্দিনে সকল প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন। ঢাকা, কুষ্টিয়া, খুলনা সব প্রোগ্রামে তিনি ছিলেন সামনের কাতারে। গতকালের এই হামলা দুঃখজনক। আমরা আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, বিএনপির কিছু লোক মাই ম্যান তৈরি করতে আওয়ামী লীগের দোসরদের দলে ঢোকাচ্ছে বলে শুনেছি। আমরা বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বিএনপির পার্টি অফিস ভাংচুর করা হয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব। তিনি অনতিবিলম্বে দোষীদের আটক পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
প্রসঙ্গে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ সহিংসতা ঘটেছে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং অগ্নিসংযোগে একটি গুদাম ও একটি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।”
আপনার মতামত লিখুন :