প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম
গোপন ভিডিও থেকে সাইদুল ইসলাম এর ছবি সংগৃহীত
কুষ্টিয়ায় পর্দা করার অপরাধে এক তরুণীকে মোল্লাতেঘরিরা এলাকায় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী মহাসড়কের পাশে অবস্থিত একতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চাকরিচ্যুত করা ছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিরুদ্ধে বাজে ব্যবহার ও নারীদের নিয়ে কুকর্ম করার অভিযোগ করেন ওই ভুক্তভোগী তরুণী। এছাড়া অভিযুক্ত ক্লিনিক মালিকের কুকর্মে রাজি না হলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয় বলেও ওই ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।
প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইদুল ইসলাম ভুক্তভোগী তরুণীকে বোরখা খুলে নার্সদের পোশাক পরে দায়িত্ব পালনের শর্ত দিয়ে তাকে চাকরিচ্যুত করেছেন বলে প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন। এসব ছাড়াও ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে রোগী দেখানো, দালালদের মাধ্যমে টেস্ট বাণিজ্য সহ নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী তরুণী চাকরিচ্যুতির পর তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এবিষয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন," আমি কুষ্টিয়া বাসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি। একতা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সাইদুল ভিষণ (ভীষণ) বাজে ও খারাপ একটা মানুষ। আমি গত চারদিন জাবত (যাবৎ) উনার হসপিটালে একটা জব নিয়েছিলাম,ঊনি মেয়েদের সাথে খুব বাজে বিহিব (ব্যবহার) করে। উনার হাসপাতালে কোন মেয়ে জব করলে পর্দা করতে পারবে না সেটা আমাকে জানানো হয়নি। চারদিন জাবত (যাবৎ) আমি পর্দা করেই ডিউটি করেছি। আজ যখন উনি আমাকে দেখছে,আমি বোরকা পরে ডিউটি করছি, তখন আমার সাথে খুব বাজে ব্যবহার করে এবং বলে বোরকা পরে থাকলে চাকরি করতে পারবো না। উনার এ বাজে কথা শুনে আমি সাথে সাথে ওখান থেকে চলে আসি। উনি ওখানে মেয়েদের নিয়ে নানা রকম কুকর্ম করে থাকেন। উনার কুকর্মে যে রাজি হবে না সে ওখানে চাকরি করতে পারবে না। এটাই হলো আসল কাহিনী। এখন আপনাদের কাছে জানতে চাই এরকম একটা খারাপ মানুষের কি করা উচিত?"
একতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সাইদুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন," মিজান নামে আমার প্রতিষ্ঠানের একজন উপদেষ্টা ছিল। ওই মেয়েটা, ওই দিয়েছিল। আমি মেয়েটার চেহারা দেখিনি। এখানকার মেয়েরাই ওই মেয়েটাকে বলেছে- এখানে ডিউটি করতে হলে নার্সের পোশাকে ডিউটি করতে হবে। একটা মেয়ে যদি কাউন্টারে মুখ বেঁধে ডিউটি কথা বলে তাহলে কথা স্পষ্ট বোঝা যাবে? যেটা ক্লিনিকের রুলস। বোরখা-টোরখা তো পরা আছেই, আবার মুখ বাঁধা। মেয়েরাই প্রথমে বলেছে মুখ খুলে ডিউটি করো। আমি চার দিনের দিন জ্বর সেরে আসলাম। এসে মেয়েটাকে ডাকালাম। ওইদিন আমি দেখলাম মেয়েটাকে। এখন চেহারা মনে নাই। ওই এক নজর দুই মিনিট, কী এক মিনিট দেখেছিলাম। বললাম, এখানে চাকরি করতে হলে বোরখা খুলে সিস্টারদের পোশাক পরে চাকরি করতে হবে,পারবা? বললো না, বের হয়ে চলে গেছে।"
প্রসঙ্গে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন`র বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে তিনি ও তার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বক্তব্যসহ আগামী পর্বে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :